আমাদের দেশে ওভুলেশন ইন্ডিউসিং ড্রাগ যেমন ক্লোমিফেন/লেট্রোজল খুবই পরিচিতি কিছু ওষুধ। এই ওষুধের কাজ হচ্ছে ওভুলেশন করানো অর্থাৎ ডিম ফুটানো। বন্ধ্যাত্ব সমস্যায় ভুগছেন অথচ এই ওষুধ খাননি এমন রোগী খুঁজে পাওয়া যাবে না। জ্বর থাকলে যেমন প্যারাসিটামল খেতে হয় তেমনি বেবি কনসিভে সমস্যা হলে এই ওষুধগুলো দরকার হয় এমনই অনেকের ধারণা। গ্রামে গঞ্জের পল্লী চিকিৎসকেরাও বুঝে না বুঝে বছরের পর বছর ধরে রোগীদেরকে এই ওষুধ গুলো দিতে থাকে।
গর্ভধারণে ব্যর্থতার ১০ বিস্ময়কর কারণ
কারণ কি?
আমাদের দেশে এটি একমাত্র সহজলভ্য চিকিৎসা যা সবাইকে দেওয়া যায়। বন্ধ্যাত্বের অন্যান্য যেসব কারণ রয়েছে তা নির্ণয় করা খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। এবং এই সমস্যা গুলোর চিকিৎসাও অনেক ক্ষেত্রে ব্যায়বহুল। তাই এভাবে অনেকটা অন্ধকারে ঢিল ছোড়ার চেষ্টা করা হয়।
চট্টগ্রামের সেরা ১০ স্ত্রী ও প্রসূতীরোগ বিশেষজ্ঞ
এই ওষুধগুলো কাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য?
RCOG, UK গাইডলাইন অনুযায়ী শুধুমাত্র যাদের ডিম্বস্ফুটন বা ওভুলেশনের সমস্যা রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলো দিতে হবে। দেখা গেছে প্রতি 100 জন বন্ধ্যাত্ব রোগীর মধ্যে মাত্র 25 জনের এই সমস্যা থাকতে পারে। অথচ আমাদের দেশে প্রায় সব সাব-ফার্টিলিটি রোগীর চিকিৎসা এই ওষুধ দিয়ে শুরু হয়।
চট্টগ্রামের বন্ধ্যাত্ব বিশেষজ্ঞ
ক্ষতিকর দিক:
অনেক প্রেসক্রিপশনে দেখেছি বন্ধ্যাত্বের প্রকৃত কারণ নির্ণয় না করেই এই ওষুধগুলো দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে যারা অন্যান্য সমস্যার কারণে কনসিভ করতে পারছেন না, তাদের ক্ষেত্রে শুধু শুধু সময় ক্ষেপন হচ্ছে। এমন অনেক পেশেন্ট দেখেছি যারা এই ধরনের ওষুধ খেয়ে তাদের রিপ্রোডাক্টিভ এজের গোল্ডেন টাইমটা নষ্ট করেছেন, কিন্তু পরে যখন অন্য ট্রিটমেন্টের মাধ্যমে বাচ্চা নেওয়ার চেষ্টা করছেন তখন আর সফল হচ্ছেন না। তাই ওষুধ খাবার আগে সমস্যা নির্ণয় করা ভালো, যদিও তা হতে পারে কিছুটা ব্যয়বহুল।
বীর্য পরীক্ষা আপনার করণীয় কি ?
কিভাবে এবং কতদিন ওষুধ গুলো খাওয়া যায়?
ডিম্বস্ফোটন সমস্যায় আক্রান্ত নারীরা ছয় মাস পর্যন্ত এই ওষুধগুলো খেতে পারে। ফলিকুলোমেট্রি করে দেখে নিতে হবে ঔষধের প্রয়োগে তার ওভাম বা ডিম বড় হচ্ছে কিনা, ডোজ বাড়ানো লাগতে পারে। ছয় মাসেও ডিম্বস্ফুটনে ব্যর্থ হলে অন্য ট্রিটমেন্টে যেতে হবে।
ডাঃ নুসরাত জাহান
ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল,চট্টগ্রাম