ডায়াবেটিস কি ?
ডায়াবেটিস হল একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ, এই রোগে অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি করে না বা শরীর কার্যকরভাবে উৎপন্ন ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারে না। ইনসুলিন একটি হরমোন যা রক্তের গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে। হাইপারগ্লাইসেমিয়া, যাকে রক্তের গ্লুকোজ বা বেড়ে যাওয়া রক্তে শর্করাও বলা হয়, এটি অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের একটি লক্ষণ এবং সময়ের সাথে সাথে শরীরের অনেক সিস্টেমের, বিশেষ করে স্নায়ু এবং রক্তনালীগুলির গুরুতর ক্ষতির দিকে নিয়ে যায়।
বাংলাদেশসহ বিশ্বে প্রতি সাত সেকেন্ডে একজন মানুষ ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আর ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ।
চট্টগ্রামের সেরা ডায়াবেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার লিস্ট
ডায়াবেটিস কত প্রকার ?
টাইপ 1 ডায়াবেটিস-(ইনসুলিন নির্ভর) / Type 1 Diabetes (insulin dependent)
টাইপ 1 ডায়াবেটিস ঘাটতি ইনসুলিন উত্পাদন দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং প্রতিদিন ইনসুলিনের নেয়ার প্রয়োজন হয়। এর কারণ বা প্রতিরোধের উপায়ও জানা যায়নি।
লক্ষণগুলির মধ্যে প্রস্রাবের অত্যধিক নির্গমন (পলিউরিয়া), তৃষ্ণা (পলিডিপসিয়া), অবিরাম ক্ষুধা, ওজন হ্রাস, দৃষ্টি পরিবর্তন এবং ক্লান্তি অন্তর্ভুক্ত। এই লক্ষণগুলি হঠাৎ দেখা দিতে পারে
টাইপ 2 ডায়াবেটিস -(ইনসুলিন নির্ভর নয়) / Type 2 Diabetes (non-insulin dependent)
টাইপ 2 ডায়াবেটিস শরীরের ইনসুলিনের অকার্যকারিতার কারণে হয়।ডায়াবেটিস রোগীদের 95% এরও বেশি টাইপ 2 ডায়াবেটিস আছে। এই ধরনের ডায়াবেটিস মূলত শরীরের অতিরিক্ত ওজন এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাবে।
লক্ষণগুলি টাইপ 1 ডায়াবেটিসের মতো হতে পারে।ফলস্বরূপ, রোগটি শুরু হওয়ার কয়েক বছর পরে নির্ণয় করা যেতে পারে, ইতিমধ্যে জটিলতা দেখা দেয়।আগে এই ধরনের ডায়াবেটিস শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যেত কিন্তু এখন এটি শিশুদের মধ্যেও ক্রমে বাড়ছে।
বিলিরুবিন বা জন্ডিস টেস্ট (Bilirubin Test): কি ও কেন করা হয় এবং সর্তকতা
গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস / Gestational Diabetes
গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হল হাইপারগ্লাইসেমিয়া যার রক্তে গ্লুকোজের মান স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কিন্তু ডায়াবেটিসের ডায়াবেটিসের কম। এই ডায়াবেটিস গর্ভকালীন অবস্থায় ঘটে।
গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলারা গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের সময় জটিলতার ঝুঁকিতে থাকে। এই মহিলারা এবং সম্ভবত তাদের সন্তানদেরও ভবিষ্যতে টাইপ 2 ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি।গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয় করা হয় প্রসবপূর্ব স্ক্রীনিংয়ের মাধ্যমে, শারীরিক লক্ষণের মাধ্যমে এটি প্রকাশ পায় না।
ডায়াবেটিস এর লক্ষণ / লক্ষন ——————————
প্রধান লক্ষনঃ
১) ঘন ঘন পানির পিপাসা।
২) ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া।
৩) অতিরিক্ত ক্ষুধা।
৪) শরীরের ওজন কমে যাওয়া।
মুখের ৩ টি লক্ষণঃ
১) মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া
২) দাঁত নড়বড়ে হয়ে যাওয়া
৩) মাড়ি জ্বালা-পোড়া করা,রক্ত পড়া,দুর্গন্ধ করা
অন্যান্য লক্ষনঃ
১) শরীরে চুলকানি,
২) বাত ব্যথা,
৩) চোখে ঝাপসা দেখা,
৪) ঘন ঘন চশমা বদল,
৫) পা জ্বালাপোড়া করা এবং অবশ বোধ করা,
৬) কাটা-ছেঁড়া সহজে না শুকানো
ডায়াবেটিস কেন হয় ???
ডায়াবেটিস এক ধরনের মেটাবলিক ডিজঅর্ডার। এক্ষেত্রে শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদন ও তা ব্যবহার করতে পারে না। অনেকের ক্ষেত্রে ইনসুলিন একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়।যে কোনো খাবার খাওয়া পর আমাদের শরীর সেই খাদ্যের শর্করাকে ভেঙে চিনিতে (গ্লুকোজ) রুপান্তরিত করে। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নামের যে হরমোন নিসৃত হয়, তা শরীরের কোষগুলোকে নির্দেশ দেয় চিনিকে গ্রহণ করার জন্যে। এই চিনি কাজ করে শরীরের জ্বালানি বা শক্তি হিসেবে।
ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল ?
খালি পেটে / Fasting Blood Sugar: 70 -110 mg/dl
ভরা পেটে / 2HABF: upto 140 mg/dl
খাবার পর কত হলে ডায়াবেটিস????
সাধারণত ভরা পেটে ডায়াবেটিস 140 mg/dl এর চেয়ে বেশী হলে
ডায়াবেটিস কত হলে মানুষ মারা যায় ? ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ ???
সাধারণত ডায়াবেটিস 40 mg/dl এর নিচে বা 400 mg/dl এর চেয়ে বেশী হলে রোগী স্ট্রোক করতে পারে।
ডায়াবেটিস টেস্ট (Diabetic Test) করার আগে এ বিষয় গুলো মনে রাখুন
ডায়াবেটিস এর চিকিৎসা কি ?
ডায়াবেটিস কখনো নিরাময় হয় না,তবে একে নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়।মেডিসিন ও নিয়মমাফিক জীবনযাপন করলে ডায়াবেটিস কন্ট্রোল করে সুস্থ থাকা যায়।
ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয় ?
প্রথমে মেডিসিন দিয়ে চেষ্টা করা হয় যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।রোগীর তারপরেও সুগার না কমলে ডাক্তার ইনসুলিন প্রেসক্রাইব করেন।ইনসুলিন রোগীর ডায়াবেটিসের টাইপ ও সুগারের উপর নির্ভর করে।
ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় ?
১) চোখের সমস্যা (রেটিনোপ্যাথি)/ ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি
২) ডায়াবেটিক ম্যাকুলার ইডিমা , যা দৃষ্টি সমস্যা বা অন্ধত্বের কারণ হতে পারে।
৩) গ্লুকোমা / Glucoma
৪) পায়ের সমস্যা (হাতে-পায়ে ঝি ঝি করা, জ্বালাপোড়া করা, ব্যথা করা, অলটার সেন্সেশন বা হেঁটে যাচ্ছেন পায়ের তলায় নরমাল একটা সেনসেশন হচ্ছে)
৫) ইউরোলজিক্যাল বা ইউরিনারি ব্লাডারের সমস্যা হলে- প্রস্রাবের কিছু সমস্যা হতে পারে। (রিটেনশন হয়ে যাওয়া, প্রস্রাব আটকে থাকা, কন্ট্রোলে না থাকা)
৬) হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোক
৭) কিডনির সমস্যা (নেফ্রোপ্যাথি)
৮) স্নায়ুর ক্ষতি (নিউরোপ্যাথি)
৯) মাড়ির রোগ এবং মুখের অন্যান্য সমস্যা
১০) যৌন সমস্যা
১১) ডায়াবেটিক কিটোঅ্যাসিডোসিস
ডায়াবেটিস কমানোর উপায় ————
১) শারীরিক পরিশ্রম করা
২) নিয়মমাফিক খাওয়া-দাওয়া করা
৩) পর্যাপ্ত ঘুম
৪) মানসিক স্ট্রেস থেকে দূরে থাকা
৫) নিয়মিত টেস্ট করার মাধ্যমে সর্তক থাকা
৬) ওজন উচ্চতা অনুযায়ী রাখা
ডায়াবেটিস টেস্ট (Diabetic Test) করার আগে এ বিষয় গুলো মনে রাখুন
আমার নানার ডায়াবেটিস হলো 28 কি করবো
আর রক্ত হলো 7 কি করবো
আর পায়ে তলাই তাঁর কাটা ফুটে ছিলো এখন সেখানে
পচে যাচ্ছে কি করলে ভালো হবে
আমার বাবার মাড়ি ফুলে গেছে আর সেখান থেকে রক্ত বেড় হয়েই চলছে,রক্ত পড়া বন্ধ হচ্ছে না,,হাত পা অবশ হচ্ছে , ঘুম হচ্ছে না । দাঁতের ডাক্তার বলছে ডায়বেটিস ঠিক হলে , যে দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত পড়তেছে তা অপারেশন করে উঠায় ফেলা লাগবে। আর ডায়াবেটিস না খাওয়া অবস্থায় সাড়ে ৮,৯,১০ আবার খাবার খাওয়ার পড় ১৮ হয় । এমন অবস্থায় কি করবো?