পেট মোচড়ানোর সাধারণ উপসর্গ কি কি ?
কোন কারণে পেট মোচড়ানো বা কামড়ানো বা ব্যথা কিভাবে বুঝবেন ???
* পেপটিক আলসার বা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা সাধারণত পেটের ওপর দিকে মাঝখানে শুরু হয়। এটা খালি পেটে বাড়ে, কখনো জ্বালাপোড়ার মতো মনে হয়। পাশাপাশি বমি ভাব, টক ঢেকুর, পেট ফাঁপা ইত্যাদি সমস্যা থাকতে পারে।
* একই জায়গায় বা একটু বাঁ দিকে প্রচণ্ড ব্যথা, যা পেছনে ছড়িয়ে যায় তা কিন্তু গ্যাস্ট্রিকের নয়। এটি অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ হতে পারে। এই ব্যথা তীব্র হয়ে থাকে। ব্যথার সঙ্গে বমিও হতে পারে। অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ একটি বড় সমস্যা।
* অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের মতোই অনুভূত হয় পিত্তথলির ব্যথাও। পেটের ওপরে ডান দিকে বা মাঝে ব্যথা পিত্তথলিতে প্রদাহ বা পাথরের কারণে হতে পারে। এই ব্যথায়ও বমি হতে পারে। তেল–চর্বিযুক্ত খাবার খেলে এটা বাড়ে। যকৃতের প্রদাহেও একই জায়গায় ব্যথা হয়। চিনচিন করে ব্যথা, সঙ্গে জ্বর, জন্ডিস, অরুচি ইত্যাদি হলে বুঝতে হবে হেপাটাইটিস বা যকৃতে প্রদাহ হয়ে থাকতে পারে। যকৃতে ফোড়া হলে এই ব্যথা তীব্র হয়, সঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসে।
* পেটের ওপরের দিকে ডান অথবা বাঁ কিডনিতে পাথর, প্রদাহ বা সংক্রমণ হলে সেই পাশে ও পেছনে ব্যথা হয়। এই ব্যথা ক্রমেই তলপেটে ছড়ায়। কিডনির ব্যথা খুবই তীব্র হয়, একটু পরপর ছাড়ে, আবার আসে। সঙ্গে বমি, কাঁপুনি দিয়ে জ্বর থাকতে পারে।
* নাভির মাঝখান থেকে ব্যথা যদি ক্রমেই তলপেটের ডান দিকে ছড়িয়ে যায়, সেখানে হাত দিলেই ব্যথা হয়, ধীরে ধীরে তীব্রতা বাড়তে থাকে, তাহলে তা অ্যাপেন্ডিসাইটিস কি না জানতে হবে।
* তলপেটে ব্যথার সঙ্গে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া ও জ্বর প্রস্রাবের সংক্রমণ নির্দেশ করে। জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের নানা সমস্যায় নারীর এই ব্যথা হতে পারে।
* সাধারণ আমাশয়, ফুড পয়জনিং ও বদহজম থেকে পেটজুড়ে মোচড়ানোর মতো ব্যথা হতে পারে। বমি বমি ভাব, পেটে আওয়াজ, পাতলা পায়খানা ইত্যাদি হয়। আবার কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও পেটে ব্যথা হয়।
পেট মোচড়ানো বা কামড়ানোর সময় কখন ডাক্তার দেখানো খুবই জরুরি ????
পেট কামড়ানো কমানোর উপায়
# গ্যাসের মেডিসিন খান
# পেট ব্যথার মেডিসিন ( অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শক্রমে)
# আদা খান:
যদি আপনার পেটে প্রচণ্ড ব্যথা হয়, তাহলে অবশ্যই আদা খান। আদা হজমশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আদার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা পেটের ব্যথা কমায়। আদা খাওয়ার জন্য প্রথমে এটিকে সূক্ষ্মভাবে কেটে নিন এবং মধু যোগ করার পর বা মধু না যোগ করে ৩-৪ মিনিট জলে ফুটিয়ে পান করুন। এটি আপনাকে দিনে দুই থেকে তিনবার করতে হবে। এটি আপনাকে পেটের ব্যথায় আরাম দেবে এবং আপনি ভাল বোধ করবেন।
# হিং ব্যবহার করুন:
গ্যাস ও পেটের সমস্যা থাকলে হিং খুবই উপকারী। হিং খেলে বদহজমের সমস্যা ও গ্যাসের সমস্যা চলে যায়। এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে তা হল হালকা গরম জল নিয়ে তাতে এক চিমটি হিং দিতে হবে। এবার এই জল দিনে ২ থেকে ৩ বার পান করুন। আপনি চাইলে এতে কিছু সন্ধক লবণও যোগ করতে পারেন। এতে পেটের ব্যথায় আরাম পাওয়া যাবে।
# পুদিনার ব্যবহার:
পেটের ব্যথা উপশমের জন্য পুদিনা খুবই ভালো বলে মনে করা হয়। পুদিনা পেট ঠান্ডা করে এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে। বাজারে পাওয়া পুদিনা জলে গুলে পান করতে পারেন। এ ছাড়া শুকনো পুদিনা পাতা জলে সিদ্ধ করে জল ঠান্ডা হলে দিনে ২-৩ বার পান করুন। এতে পেটের ব্যথায় আরাম পাওয়া যাবে।