করোনা মহামারীর এ সময়ে বহুল ব্যবহৃত একটি যন্ত্রের নাম হলো পাালস অক্সিমিটার। যন্ত্রটি কেনার হারও বেড়েছে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়ার সাথে সাথে। অনেকেই হয়তো নামই জানি না যন্ত্রটির। জানি না কী কাজ করা হয় এই পালস অক্সিমিটার দিয়ে।
পালস অক্সিমিটার হলো একটি বহনযোগ্য মেডিকেল ডিভাইস, যা দিয়ে মানুষের দেহে রক্তের অক্সিজেন সম্পৃক্ততা মাপা হয়। ১৯৫৩ সালে সর্বপ্রথম এটি তৈরি করেন জার্মান চিকিৎসাবিদ কার্ল ম্যাথ। এ যন্ত্র দিয়ে ব্যথাবিহীনভাবে রক্তে অক্সিজেনের সম্পৃক্ততা পরিমাপ করা হয়।
পালস অক্সিমিটার, হৃৎস্পন্দন ও শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা মাপার যন্ত্র।সহজে বহনযোগ্য ছোট যন্ত্রটি কতই না কাজের।আঙ্গুলের মাথায় লাগিয়ে জানা যায় রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণ।
এই যেমন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বা উপসর্গ রয়েছে এমন মানুষদের জন্য পালস অক্সিমিটার হতে পারে সাহায্যকারী একটি যন্ত্র।এতে কার হাসপাতাকে ভর্তি হতে হবে,কখন হতে হবে,কার অক্সিজেন থেরাপি দরকার এবং কাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে বা আইসিইইউ-তে নিতে হবে কিংবা ভেন্টিলেশনে রাখতে হবে,তা সহজেই জানা যায় পরীক্ষার মাধ্যমে।
এছাড়া নানা কারণে বা অসুখে শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হতে পারে,হৃদস্পন্দন খুব কম,বেশী বা অনিয়মিত হতে পারে।পালস অক্সিমিটার দিয়ে ঝটপট মেপে নেয়া যেতে পারে হৃৎস্পন্দন ও শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা।সমস্যা বেশী মনে হলে হাসপাতালে বা চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।
শরীরে অক্সিজেনের স্বাভাবিক মাত্রা
সাধারণত পালস অক্সিমিটারে ৯৫ থেকে ১০০ শতাংশ অক্সিজেন মাত্রাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।এর অর্থাৎ ৯৫ শতাংশের কম হলে হাইপোক্সিয়া বলা হয়।শরীরে তখন অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দেয়।তখন শ্বাস নিতে কষ্ট নিতে প্রচন্ড কষ্ট হয়।সঙ্গে মাথাব্যথা,বুকব্যথা,হৃদস্পন্দন বেড়ে যেতে পারে।স্থায়ী হাইপোক্সিয়া দেহের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্ষমতা শেষ করে দেয় এবং কোষের মৃত্যু ঘটায়।আর এজন্যই ভেন্টিলেশনের মাধ্যমে অক্সিজেন দিতে হয়।তবে কিছু কিছু দীর্ঘস্থায়ী ফুফুসের রোগের ক্ষেত্রে অক্সিজেনের মাত্রা কিছুটা কম ও স্বাভাবিক ধরা হয়।
অক্সিমিটার সব সময় কি ঠিক মাত্রা পরিদর্শন করে
সাধারণত সব পালস অক্সিমিটারেই একই ধরনের ফল দেয়।অক্সিজেনের মাত্রা অক্সিমিটার ভেদে বা ভিন্ন ভিন্ন সময় ভেদে একই অক্সিমিটার ফল ২ শতাংশ কম বা বেশী দেখাতে,যা স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয়।
কোন আঙ্গুলে বেছে নেওয়া ভালো
দুই হাতের সব আঙ্গুলের মাধ্যমেি মাপা যায়।কিন্তু বলা হয়ে থাকে,ডান হাতে কাজ করতে অভ্যস্ত ডান মধ্যমা ও বুড়ো আঙ্গুল এবং বাঁ হাতে বেশী কাজ করতে অভ্যস্ত মানুষের ক্ষেত্রে বাঁ হাতের মধ্যমা ও বুড়ো আঙ্গুল ভালো ফল দেয়।
কখনো ভুল ফল দিতে পারে
হাত যদি শরীরের তাপমাত্রার চেয়ে বেশী ঠান্ডা থাকে,তাহলে অক্সিমিটার সঠিকভাবে কাজ করে না।সে ক্ষেত্রে পালস অক্সিমিটার ভুল ফল দিতে পারে।তাই ব্যবহারের আগে অবশ্যই এই ব্যাপারে বিশেষ নজর দিতে হবে।