A Leading Doctor information Site In Chittagong

kk
4
22
a5
a3
2
5
dr3 (1)

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম: কমন কিন্তু জটিল সমস্যা

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম( পিসিওএস) একটি পরিচিত হরমোনের সমস্যা যা প্রতি একশত জন নারীর মধ্যে আট থেকে দশ জনের থাকতে পারে। যারা এনুভুলেশনের(ডিম্বস্ফুটনের সমস্যা) কারনে বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন তাদের মধ্যে শতকরা ৭৫ জনের পিসিওএস দেখা যায়। এই সমস্যার সঠিক কোন কারন জানা না গেলেও সাধারণত এটিকে একটি বংশগত রোগ বলা যায়।

চট্টগ্রামের সেরা ১০ স্ত্রী ও প্রসূতীরোগ বিশেষজ্ঞ

পিসিওএস হলে কি হয়?

পিসিওএস এর প্রভাবে শরীরে মারাত্মক ক্ষতিকর কোন সমস্যা হয় না,তবে এটি শরীরে হরমোনের ভারসম্য নষ্ট করে। এর ফলে প্রতি মাসে ওভারি থেকে ডিম্বাণু নির্গমন হয় না। এই অনি্সরিত ডিম্বাণু গুলো ওভারিতে পানির থলে বা সিস্ট তৈরি করে ওভারির চারপাশে মালার মত জমা হয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারনে মাসিক সময় মত হয় না। কখনো কখনো মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আক্রান্ত নারীদের ঠিকমত ওভুলেশন না হওয়ায় কনসিভ করতে সমস্যা হয়। পিসিওএস আক্রান্ত ওভারি থেকে পুরুষ হরমোন এন্ড্রোজেনের নি্সরন বেড়ে যায়। এর ফলে ব্রন,কালো দাগ,শরীরের ওজন বৃদ্ধি,চুল পড়া এবং শরীরে অবাঞ্চিত পশম বেড়ে যায়।

কিভাবে সনাক্তকরণ সম্ভব?

পলিসিসটিক ওভারি থাকলেই যে পিসিওএস তা কিন্তু নয়। নিচের তিনটি লক্ষণ এর যেকোনো দুটি থাকলেই পিসিওএস ডায়াগনোসিস করা যায়।
# অনিয়মিত বা একেবারেই মাসিক না হওয়া
# মুখের বা শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুল বৃদ্ধি অথবা টেস্টোস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া।
# আল্ট্রাসনোগ্রামে পলিসিসটিক ওভারি থাকা।

 চিকিৎসা পদ্ধতি :

পিসিওএস এর নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা পদ্ধতি নাই। লক্ষন এবং রোগীর চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়।
যারা বাচ্চা নিতে আগ্রহী তাদেরকে ডিম্বস্ফুটনের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষুধ দেয়া হয়। FSH ও LH হরমোনের অনুপাত পরিবর্তন এবং প্রজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা দেখে এনুভুলেশন সনাক্ত করা হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে অপারেশন করার দরকার হতে পারে। সাধারণত ল্যাপারোস্কপি করে সিস্ট রাপচার করা হয়(ওভারিয়ান ড্রিলিং)। এই চিকিৎসা পদ্ধতি ওভারি থেকে হরমোনের অস্বাভাবিক নি:সরনকে স্বাভাবিক করে ডিম্বস্ফুটনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।
যারা বাচ্চা নিতে চান না এবং অনিয়মিত মাসিকে ভুগছেন তাদেরকে মাসিক নিয়মিত করার জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণএর পিল বা প্রজেস্টেরন জাতীয় ঔষুধ দেয়া হয়। এই ঔষুধগুলো একদিকে যেমন হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে এনে মাসিক নিয়মিত করে, অন্যদিকে পুরুষ হরমোনের মাত্রা ঠিক করে ত্বকের ব্রন ও অতিরিক্ত লোম দূরকরনে সাহায্য করে।

#দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা:

পিসিওএস এ যারা ভুগছেন তাদের কিছু দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হবার সম্ভাবনা থাকে। পিসিওএস আক্রান্তদের শরীর ইনসুলিন সঠিকভাবে ব্যাবহার করতে পারে না। এরফলে রক্তে শর্করার পরিমান বেড়ে যায় এবং ডায়াবেটিস হবার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের মাত্রা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া অনিয়ন্ত্রিত ইস্ট্রোজেন হরমোনের কারণে জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তবে জীবন যাত্রার পরিবর্তন ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস এর মাধ্যমে জটিলতা এড়ানো যায়।
পিসিওএস এর মূল নিরাময়ক হচ্ছে নিয়মিত শরীরচর্চা এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহনের মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা। সঠিক ওজন শরীরে হরমোনের ভারসম্য ফিরিয়ে আনে এবং দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হবার ঝুকি কমিয়ে দেয়।

ডা: নুসরাত জাহান
অ্যাসোসিয়েট কনসালটেন্ট (গাইনী-অবস)
ইমপেরিয়াল হসপিটাল, চট্টগ্রাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *