গ্যাংগ্রিন কি ?
গ্যাংগ্রিন এমন একটি অবস্থা যাতে শরীরে স্বাভাবিক কোষ বা টিস্যু নষ্ট হয়ে যায় বা মারা যায়।এটি তখনই ঘটে যখন শরীরের ঐ কোষে বা কোষ গুলোতে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয় বা বন্ধ হয়ে যায়।আর এই গ্যাংগ্রীন কিভাবে শুরু হয়?
আপনি হাতে বা পায়ে বা যে কোন জায়গায় আঘাত পেলেন বা কেটে গেলেন, সেখানে জীবাণুর সংক্রমণ হলো।ধীরে ধীরে সে জায়গায় পুজ জমলো,পেকে গেলো এবং একসময় ঘা হয়ে গেলো।সাধারণত পায়ের আঙ্গুল,হাতের আঙ্গিল এবং ঐ সব শরীরের জায়গা যে গুলোতে বাতাস লাগে কম।
গ্যাংগ্রিন অনেকসময় অযাচিত ভাবে দেখা দেয়,তখন চামড়া বর্ণহীন হয়ে যায়,অনুভূতি কাজ করে না। এ সিম্পটম গুলো অবহেলা করা উচিত নয়।এরকম লক্ষণ দেখা দিলে বা গ্যাংগ্রিন হয়েই গেলে জরুরি ভাবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।ক্ষত স্থানের মৃত টিস্যু অপসারণ করতে হবে এবং ব্যাকটেরিয়া যাতে আর ছড়াতে না পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।দীর্ঘমেয়াদী গ্যাংগ্রিনে প্রাণের ঝুকি তৈরী হতে পারে।
শরীর বিভিন্ন ধরনের গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত হতে পারেঃ
শুকনো গ্যাংগ্রিন
এই টাইপের গ্যাংগ্রিনে দেহের নির্দিষ্ট কোন জায়গায় রক্ত চলাচল বন্ধ থাকে। শরীরের আক্রান্ত অংশটি কালো রংয়ের বা বেগুনী বা সবুজ রংয়ের হয়ে যায়।চামড়া শুকনো হয়ে যায় এবং কুচকে যায়।
ভেজা গ্যাংগ্রিন
আক্রান্ত জায়গা ভেজা ভেজা থাকে।ফোস্কা পড়ে,আক্রান্ত জায়গা ফুলে যায়।ভেজা গ্যাংগ্রিনে আক্রান্ত রোগীদের শরীর জ্বালাপোড়া করে।ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা পায়ের আঙ্গুলের ফাকে বা পায়ে আঘাত পেলেই এ গ্যাংগ্রিন হয়।এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
গ্যাস গ্যাংগ্রিন
এই ধরনের গ্যাংগ্রিন সাধারণত কোন ইনফেকশন থেকে ঘটে।আক্রান্ত জায়গায় ব্যাকটেরিয়া গ্যাস,ক্ষতিককর টিস্যু কোষ ও রক্তনালীতে ছেড়ে দেয়।কোন এক্সিডেন্ট বা অপারেশনের পরে এ গ্যাংগ্রিন দেখা দেয়।আক্রান্ত জায়গা বাদামী-লালচে রংয়ের হয়ে যায়।চামড়া নিচে “বুদবুূদ” দেখা দিতে পারে।
ইন্টারনাল গ্যাংগ্রিন
শরীরে ভেতরেও গ্যাংগ্রিন হতে পারে যদি কোন অঙ্গে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।সাধারণত অন্ত্র,পিত্তথলি ও এপেনডিক্সকে আক্রান্ত করে।এই ধরনের গ্যাংগ্রিন হলে রোগী গুরুতর ব্যথা ও জ্বর থাকবে।
ফরনিয়ার’স গ্যাংগ্রিন
এই ধরনের গ্যাংগ্রিন যৌনাঙ্গে আক্রান্ত করে।এটি প্রস্রাবের ও যৌনাঙ্গের ইনফেকশন থেকে হয়।এটি হলে যৌনাঙ্গে ব্যথা,ফোলাভাব ও দূর্গন্ধ থাকে।সাধারণত এটি পুরুষের হয়ে থাকে,তবে মহিলারাও আক্রান্ত হতে পারেন।
প্রগ্রেসিভ ব্যাকটেরিয়া সাইনারজেটিক গ্যাংগ্রিন
এটি বিরল ধরণের সাধারণত অপারেশন করার ১ সপ্তাহ থেকে ২ সপ্তাহ পর অপারেশনে জায়গার চারপাশে আক্রান্ত করে।
গ্যানংগ্রিন কিভাবে ডায়াগনোসিস হয় ?
# ডাক্তারের কাছে গিয়ে রোগীর যত মেডিকেল হিস্ট্রি আছে বলতে হবে
# সাম্প্রতিক সময়ে কোন আঘাত বা ইনজুরি হয়ে থাকলে ডাক্তারকে বলতে হবে
# সিবিসি টেস্টে “WBC” এর পরিমাণ বেশী আসবে
# আরটেরিওগ্রাম(Arteriogram test) টেস্ট করলে রক্তনালীতে রক্ত কি পরিমাণ চলাচল করে এবং রক্তনালীর কোন জায়গায় ব্লক হয়েছে তা বের করা হয়
# এক্স-রে,সিটি স্ক্যান,এমআরআই এই টেস্ট গুলো করা হয় গ্যাংগ্রিন কতটা ছড়িয়েছে বুঝার জন্য
# যদি “ইন্টারনাল গ্যাংগ্রিন” হয় তবে সার্জিক্যাল অপারেশন লাগবে ডায়াগনোসিস এর জন্য
# টিস্যু কালচার করা হয়
গ্যাংগ্রিনের সাথে ডায়াবেটিসের সর্ম্পক কি ?
কৃতজ্ঞতাঃ
ডাঃ এম এ মুকিত
ডায়াবেটিক ফুট ও বেড সোর স্পেশালিস্ট
কনসালটেন্ট অর্থোপেডিক
পিপলস হাসপাতাল,
৯৪, কে বি ফজলুল কাদের রোড,চকবাজার মেডিকেল এর সামনে,চট্টগ্রাম
হটলাইনঃ০১৬৭৪-৬৫৯৫৪৮, ০১৯৬১-১৪০০৯৩
ধন্যবাদ,,,, অনেক কিছু জানলাম