A Leading Doctor information Site In Chittagong

kk
4
22
a5
a3
2
5
dr3 (1)

জ্বর কি ও কেন এবং জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কি ও কেন এবং জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়

জ্বর কি ?

জ্বর হচ্ছে শরীরেরর উচ্চ তাপমাত্রা।যেটি সাধারণত জীবাণুর বিরুদ্ধে শরীর যখন যুদ্ধ করে বা আমাদের বডি ডিফেন্স সিস্টেম যখন কাজ তখন শরীরে জ্বর আসে।এটি একটি ভালো লক্ষণ।জ্বর কিন্তু কোন রোগ নয়।এটি একটি শারীরিক অবস্থা।

শরীরের সাধারণ তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা ৩৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস।যখন কারো শরীরের তাপমাত্রা বাড়বে বুঝতে হবে তার শরীর হেলদি আছে এবং জীবাণু বিরুদ্ধে লড়াই করছে,তার ইমিউনিটি ভালো

 

 

উচ্চ তাপমাত্রাকে কখন আমরা জ্বর বলবো ?

প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য,যদি শরীরের তাপমাত্রা ১০০.৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট থাকবে।

 

শিশুদের ক্ষেত্রে,

পায়ুপথে তাপমাত্রা যখন ১০০.৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট থাকবে,

মুখে তাপমাত্রা থাকেব ৯৯.৫ ডিগ্রী,

বগলের নিচে ৯৯.০ ডিগ্রী

 

 

জ্বর আসার লক্ষণঃ

# শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি সত্ত্বেও সাধারণত ঠান্ডা অনুভূত হয়।

# তাপমাত্রা

# কাপুনি

# ঘাম হওয়া

# মাথা ব্যথা

# মেজাজ খিট্মিটে

# খাওয়ার ইচ্ছা কমে যাওয়া

# পানিশূন্যতা

# ক্লান্তি বা দুর্বল লাগা

 

জ্বরের  প্রকারভেদঃ

তাপমাত্রা পরিবর্তনের ধরন রোগের উপর নির্ভরশীল: জ্বর এর পরিবর্তনের ধরন থেকেই কখনো কখনো রোগ নির্ণয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারেঃ

 

# একটানা জ্বরঃ সারাদিন ধরে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১0 সে. এর বেশি তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় না। যেমনঃ লোবার নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, মূত্রনালির ইনফেকশন, ব্রুসেলসিস, টাইফাস ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে একটানা জ্বর পরিলক্ষিত হয়। টাইফয়েড রোগের ক্ষেত্রে জ্বরের একটি নির্দিষ্ট আঙ্গিক দেখা যায়। জ্বর ধাপে ধাপে বাড়ে এবং উচ্চ তাপমাত্রা অনেকক্ষণ থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

 

 

# নির্দিষ্ট বিরতিতে জ্বরঃ জ্বর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাড়ে এবং পরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়, যেমনঃ ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর (kala-azar), পাইয়েমিয়া, সেপ্টিসেমিয়া (রক্তের সংক্রমন)। এর প্রকারভেদগুলো হলঃ

—কুয়োটিডিয়ান জ্বর, যার পর্যায়কাল হল ২৪ ঘণ্টা, সাধারণত ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়।

—টারশিয়ান জ্বর, যার পর্যায়কাল ৪৮ ঘণ্টা, এটিও ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়।

—কোয়ার্টান জ্বর, যার পর্যায়কাল ৭২ ঘণ্টা, এটি দেখা যায় Plasmodium malariae জীবাণুর ক্ষেত্রে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]

 

 

# স্বল্প বিরতিতে জ্বরঃ শরীরের তাপমাত্রা সারদিন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১0 সে. এর চেয়ে বেশি উঠা নামা করে। যেমনঃ infective endocarditis.

 

 

# Pel-Ebstein জ্বরঃ এই বিশেষ ধরনের জ্বরটি হজকিন লিম্ফোমা এর ক্ষেত্রে দেখা যায়। জ্বর এক সপ্তাহ বেশি, এক সপ্তাহ কম- এভাবে চলতে থাকে। তবে আদৌ এ ধরনের জ্বর বিদ্যমান কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

 

 

# দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অবর্তমানে এক ধরনের জ্বর দেখা যায় যাকে বলা হয় “ফিব্রাইল নিউট্রোপেনিয়া ” ।এক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধী নিউট্রোফিল এর অভাবে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমন তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পরে। তাই এই রোগের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। যেসব রোগীর কেমোথেরাপি চিকিৎসা চলছে যা কিনা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ বেশি দেখা যায়।

 

 

# Febricula, এটি একটি প্রাচীন শব্দ যা এমন ধরনের জ্বরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় যখন তাপমাত্রা বেশি উঠে না এবং বিশেষ করে যখন জ্বরের কারণ অজানা থাকে। এ ধরনের জ্বর থেকে রোগী এক সপ্তাহে সেরে ওঠে।

 

জ্বর কেন হয় ?

# বিভিন্ন কারণে শরীরে জ্বর আসতে পারে।তবে কমন কারণ হচ্ছে ঠান্ডা বা সর্দি।

# যে কোন ধরণের ইনফেকশন

# প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশান

# ভ্যাক্সিনাশান

# যে কোন রোগেই জ্বর আসতে পারে,প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে।

কিছু শারীরিক অবস্থার কারনে,যেমনঃ

# স্ট্রেস

# ভারী কাপড় পড়া

# পিরিয়ড

# শারীরিক আঘাত

# আচমকা ভয় পেলে

 

জ্বর নির্ণয়ে ল্যাব টেস্টঃ

# সিবিসি টেস্ট (cbc test)

# টাইফয়েড টেস্ট (widal test)

# প্রস্রাব টেস্ট / ইউরিন টেস্ট (urine r/e)

# ম্যালেরিয়া টেস্ট (ict for malaria)

# ডেঙ্গু টেস্ট (ict for dngue-NS1)

# চিকুনগুনিয়া টেস্ট

জ্বর হলে করণীয় চিকিৎসাঃ

# জ্বর যদি ১০১ ডিগ্রীর নিচে হয়,তাহলে কোন চিকিৎসার দরকার নেই।

# প্রচুর পরিমাণে পানি বা তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে।

# বেড রেস্ট নিতে হবে।

 

জ্বর হলে কি ঔষধ খাওয়া উচিত ?

# এসপিরিন, এসিটামিনোপেন, আইবোপ্রুফেন জাতীয় ওষুধ খেতে পারেন।

বিঃদ্রঃ ১৭ বছরের নিচে কাউকে “এসপিরিন” জাতীয় ওষুধ দেয়া যাবে না।

 

দ্রুত জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়ঃ

১। হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করুন। হালকা গরম পানিতে গোসল করলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যাবে। তবে ঠান্ডা পানিতে গোসল করে শরীরকে শীতল করার চেষ্টা কখনই করবেন না।

কারণ জ্বর নিয়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গে রক্ত ছুটে যাবে ও মূল তাপমাত্রা অনেকটাই বেড়ে যাবে। অন্যদিকে ত্বক শীতল হয়ে পড়বে ও শরীরে কাঁপুনি শুরু হবে।

 

২। স্পঞ্জ বাথও নিতে পারেন। বগল ও কুঁচকির মতো উচ্চ তাপমাত্রার (temperature) অংশে ঠান্ডা পানিতে ভেজা স্পঞ্জ বা নরম কাপড় দিয়ে মুছে নিলে জ্বর অনেকাংশে কমে আসবে।

 

৩। গোসল করতে না চাইলে কপাল ও ঘাড়ের ওপর ঠান্ডা পানিতে ভেজা নরম কাপড় রাখলেও জ্বর কমে আসবে।

 

৪। শরীরকে শীতল করার একটি প্রক্রিয়া হলো ঘাম নিঃসরণ। তাই শরীর থেকে ঘাম ঝরিয়ে জ্বর কমানোর চেষ্টা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ঘাম নিঃসরণকে উদ্দীপ্ত করতে আদার চা পান করতে পারেন।

এক মগ পানিতে আধ চা-চামচ আদা কুচি কুচি ঢেলে ফুটিয়ে নিন। এরপর এই পানীয়কে ছেঁকে কুসুম গরম অবস্থায় পান করুন।

 

৫। জ্বর (fever) আসলে খাবারে বেশি পরিমাণে ঝাল মরিচের গুঁড়া ব্যবহার করুন। ঝাল মরিচের প্রধান উপাদান হলো ক্যাপসাইসিন। এটি শরীর থেকে ঘাম ঝরিয়ে জ্বর কমাতে পারে।

 

৬। জ্বরের জনপ্রিয় একটি ঘরোয়া টোটকা হলো ওয়েট-শক ট্রিটমেন্ট। বিছানায় যাওয়ার পূর্বে প্রথমেই হালকা গরম পানিতে পা ভিজিয়ে নিন। এরপর ১ জোড়া কটনের মোজাকে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে পরে নিন।

এর ওপর পশমের ১ জোড়া শুকনো মোজা পরুন। এ প্রক্রিয়াতে পায়ের দিকে রক্ত তাড়াতাড়ি ছুটে আসবে এবং জ্বর কমবে।

 

৭। পায়ের দিকে রক্ত টেনে আনার অন্যতম উপায় হলো মাস্টার্ড ফুটবাথ। ৪ মগ কুসুম গরম পানিতে ২ চা-চামচ সরিষা গুঁড়া মিশিয়ে পা দুটিকে কিছুক্ষণ জন্য ডুবিয়ে রাখুন। এতেও জ্বর (fever) কমে আসবে।

 

৮। প্রাচীনযুগের জ্বরের টোটকা হচ্ছে চাদরকে ঠান্ডা পানিতে ভিজিয়ে শরীরে পুরোপুরি মুড়ে নেয়া। তবে আজকের চিকিৎসকেরা শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমানোর বিপক্ষ বলে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন। চাদরটি শরীরে মুড়িয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে খুলে ফেলুন।

 

৯। জ্বরে শরীর সহজেই পানিশূন্য হতে পারে। তাই প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।

 

১০। জ্বরে কমলার রস ও অন্যান্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলের রস খেলে অনেকটা উপকার পাওয়া যায়। ভিটামিন-সি ইমিউনিটি সিস্টেমকে ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়তে সহায়তা করে।

মধু ও তুলসিপাতা

সর্দি-কাশি বা জ্বরের মতো সমস্যায় মধু খুবই উপকারী। অসুখ-বিসুখে মধুর ব্যবহার বেশ পুরনো। মধু ও তুলসীপাতা গলার কফ পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। সর্দি-কাশি হলে নিয়মিত সকালে মধু আর তুলসিপাতা একসাথে খেয়ে নিন। কিছুক্ষণ পরেই দেখবেন গলা পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যাবে।

আদা চা

আদার চা জ্বর কিংবা সর্দি-কাশি থেকে সহজে মুক্তি দেয়। শুধুমাত্র গলার কফ দূর করতেই নয়, বুকের কফ পরিষ্কার করতেও আদা চায়ের তুলনা হয় না। আদা চা তৈরির জন্য হালকা গরম পানিতে চিনি দিয়ে ফোটান। চিনি মিশে গেলে চা দিয়ে ফোটাতে হবে।

এরপর এতে আদার ছোট ছোট কুচি মেশান। এরপর ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিন চা। চাইলে মেশাতে পারেন লেবুর রস। এটা চায়ের ভিটামিন-সি যোগ করে। এই আদা চা খেলে সর্দির সময় মাথা ধরা কমে যায়। দুর্বলতা কেটে শরীরকে সুস্থ ও সতেজ করে তোলে।

ভিটামিন

শরীরে বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব হলে শরীর অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন বাইরের রোগ-জীবাণু সহজেই শরীরকে আক্রমণ করতে পারে। ফ্লুও একই কারণে হয়ে থাকে। তাই ফ্লু থেকে দূরে থাকতে ভিটামিন খাওয়া জরুরী।

কিছু খাবারে থাকে প্রচুর ভিটামিন-এ, বি, সি ইত্যাদি। তাই খাবারের একটি ঠিকঠাক তালিকা তৈরি করার চেষ্টা করুন যাতে শরীরে সব ধরণের ভিটামিন ঠিকমতো প্রবেশ করতে পারে।

তরল খাবার

বুকে কফ জমে গেলে তা বের করা খুব কঠিন। এমনকি সঠিক চিকিৎসা না হলে হতে পারে ইনফেকশন। তাই সর্দি-কাশির সময় কোনোভাবেই যেন বুকে কফ বসে না যায়। এর জন্য খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে তরল।

বিশুদ্ধ পানি পানের পাশাপাশি ফ্রুট জুস বা স্যুপ জাতীয় খাবার খান দৈনিক। তরল জাতীয় খাবার কফকে সহজে বুকে বসতে দেয় না।

বিশ্রাম

এসময় জ্বর (fever) অনুভূত হলে বাড়ি থেকে কোথাও না বেরিয়ে বাড়িতেই বিশ্রাম নিন। এতে সংক্রমণের আশঙ্কা কমে যাবে। এসময় শরীর যথেষ্ট দুর্বল থাকে। তাই ঠিকঠাক বিশ্রাম নিতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম। বাড়িতে চেষ্টা করুন পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নেয়ার।

 

 

কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ?

# জ্বরের সাথে যদি খুব বেশী ঘাড় ব্যথা থাকে।

# জ্বরের ঘরোয়া চিকিৎসার পরেও তাপমাত্রা ২ ঘণ্টার মধ্যে ১০৩ ডিগ্রীর নিচে না নামে।

# যদি ২ দিনের বেশী সেইম তাপমাত্রার জ্বর থাকে।

# জ্বরের সাথে শরীরের র‍্যাশ থাকে।

# রোগী যদি লাইট বা আলো দেখে বিরক্ত হয় বা ভয় পায়।

# রোগীর যদি প্রস্রাব কমে যায় বা একেবারে না হয়।চোখ যদি শুকিয়ে যায়।

# যদি খিচুনী হয়।

Reference:

https://bn.wikipedia.org/

https://www.jonny360.xyz/

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *