A Leading Doctor Chamber information Site In Chittagong

kk
4
22
a5
a3
2
5
টনসিল কি, কেন হয় এবং চিকিৎসা ও প্রতিকার

গলায় ব্যাথা হলেই সাধারনত আমরা ধরে নিই টনসিলে ইনফেকশন হয়েছে। টনসিল হলো আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধকারী অংঙ্গ এবং এগুলো মুখের ভেতরে কয়েকটি গ্রুপে অবস্থান নেয়।
এগুলোকে প্যালাটাইন, লিংগুয়াল, টিউবাল ও অ্যাডেনয়েড টনসিল বলে। সাধারণত প্যালাটাইন টনসিলই সাধারণ মানুষের কাছে টনসিল হিসেবে পরিচিত।

টনসিলের ইনফেকশন বা টনসিলাইটিস শিশু এবং বাচ্চাদের বেশি হলেও এটি যেকোন বয়সেই হতে পারে।
এই ইনফেকশন সাধারণত ২ ধরনের হয়।

****  তীব্র বা হটাৎ প্রদাহ ( Acute Tonsillitis),

****  দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ (Chronic Tonsillitis)

কখনও কখনও টনসিলের চারিপাশে ফোঁড়া হতে পারে, যেটাকে বলা হয় #Peritonsillar_Abscess. এ ক্ষেত্রে তৎক্ষনাৎ লোকাল এনেস্থিসিয়ার মাধ্যমে পূঁজ বের করে দিতে হয় এবং পরবর্তীতে এক থেকে দেড় মাস পর টনসিল অপারেশন করে ফেলে দিতে হয়।

টনসিল হওয়ার রোগের লক্ষণঃ

# গলাব্যথা, তীব্র বা মাঝারি ধরনের

# মাথাব্যথা, জ্বর

# খাবার খেতে কষ্ট ও মুখ হাঁ করতে অসুবিধা হয়।

# কানেও ব্যথা হতে পারে।

# মুখ দিয়ে লালা বের হয় ও কণ্ঠস্বর ভারী হয়ে যেতে পারে।মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হতে পারে।

# স্বরভঙ্গ,গলায় ঘা সহ টনসিল স্ফীতি, ঢোঁক গিলতে কষ্ট হয়,গলা ফুলে যাওয়া।

 

টনসিল হবার কারণ:

পুষ্টির অভাব বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, আইসক্রিম, ফ্রিজে রাখা শীতল পানি বেশি পান করা,
মুখ ঠিকমত পরিষ্কার না রাখা, ক্ষতিকর ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ টনসিলের ইনফেকশনের কারন হতে পারে।
স্যাঁতসেঁতে বাসস্থান, ঠান্ডা আবহাওয়া, শীতের প্রকোপ বেশি হলে, গরমে ঘাম বসে গেলে টনসিলের প্রদাহ বেড়ে যেতে পারে।

টনসিল ইনফেকশন হলে কি করবেন ?

# প্রচুর পরিমাণে কুশুম গরম পানি ও তরল খাবার খেতে হবে।

# পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে যত দিন সুস্থ না হবে।

# মুখের হাইজিন (মুখগহ্বরের স্বাস্থ্য) বা ওরাল হাইজিন ঠিক রাখতে হবে।

# বারবার কুলি বা মাউথ ওয়াশ (Viodin / Arodin Mouth wash 1%) করতে হবে।

# সাধারণ স্যালাইন বা লবণ মিশ্রিত গরম পানি দিয়ে বারবার কুলি করতে হবে।

# লেবু বা আদা চাও খেতে পারেন।

# গলায় ঠান্ডা লাগানো যাবে না।

যেহেতু তীব্র ব্যথা থাকে এবং জ্বর থাকে, সে ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ খেতে এবং পরবর্তীতে চিকিৎসকের পরামর্শে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হতে পারে।

নিয়মিত ঔষধ খেলে, পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও নিয়ম মেনে চললে রোগী সাধারণত ১-২ সপ্তাহের মধ্যে পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে।
তবে অপর্যাপ্ত চিকিৎসা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে দীর্ঘ মেয়াদী ইনফেকশন বা ক্রনিক টনসিলাইটিস হতে পারে এবং কিছু অন্যান্য শারীরিক জটিলতা যেমন, কিডনি ও হার্টের বাল্বের সমস্যাও হতে পারে।

দীর্ঘমেয়াদি টনসিলাইটিসের চিকিৎসা সাধারণত অস্ত্রোপচার বা অপারেশন। যদি বারবার টনসিলাইটিস হয় বা এর জন্য অন্য কোনো জটিলতার সৃষ্টি হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে টনসিল ফেলে দেয়াই ভালো।

টনসিল হলে কি কি খাওয়া যাবে নাঃ

# এলকোহল

# টমেটো এবং টমেটো সস

# আচার

# সিগারেট

# টক জাতীয় ফল

# শক্ত খাবার (চিপস, কাঁচা সবজি, গাজর)

# চর্বিযুক্ত খাবার

# ঝাল খাবার

# ফাস্ট ফুড

 

যে ৪ টি খাবার টনসিলের ব্যথায় আপনাকে আরাম দিবেঃ

# লবণ-পানি——-একটু গরম পানিতে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে গরগরা ক্রুন,আরাম পাবেন।

# মধু ও লেবু——–এক গ্লাস গরম পানিতে, একটি লেবু, ১ চামচ ও এক চিমটি লবণ গুলিয়ে খান।ভালো লাগবে।

# মধু ও গ্রীন টি——— হাফ চামচ গ্রীন টি ও ১ চামচ মধু পানিতে গুলিয়ে ১০ মিনিট সিদ্ধ করুন।এটি এন্টিব্যাক্টেরিয়াল,যা ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়বে।

# দুধ ও হলুদ——— ১ কাপ দুধে সামান্য হলুদ মিশিয়ে নিন,খেয়ে ফেলুন।হলুদ এন্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

 

কখন টনসিলের অপারেশন করতে হয় ?

# দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক টনসিলাইটিস

# টনসিল বড় হয়ে শ্বাসনালি বন্ধ হয়ে গেলে এবং নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা হলে।

# টনসিলে যদি ফোঁড়া বা পেরিটনসিলার এবসেস হয়।

# যদি বছরে তিন-চার বারের বেশি ইনফেকশন হয়।

# এসব কারণ ছাড়াও যদি দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক ক্রিপটোকঙ্কাল ইনফেকশন হয়।

# স্টাইলয়েড প্রসেস অপারেশন এর সময়

 

কখন টনসিলের অপারেশন করা যাবে নাঃ

# অ্যাকিউট ইনফেকশন থাকলে টনসিলে অস্ত্রোপচার করা যাবে না। কারণ, তখন ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে যেতে পারে এবং রক্তপাত বন্ধ না-ও হতে পারে।

# জ্বর বা ব্যথা থাকা অবস্থায় করা যাবে না।

# যদি কারও রক্তরোগ থাকে, যেমন থ্যালাসেমিয়া।রক্তনালি এবং রক্তরোগ থাকলে টনসিলে অপারেশন করা যাবে না। এ ছাড়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনে না এনে অপারেশন করা যাবে না।

টনসিলে কি কি ঔষধ দেয়া হয় ?

টনসিলের চিকিৎসার শুরুতে সাধারণত ব্যথানাশক ঔষধ দেয়া হয়।কিন্তু ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে যদি টনসিলের সমস্যা হয় তাহলে চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন।

বিঃদ্রঃ এন্টিবায়োটিকের ডোজ অবশ্যই পুরো করতে হবে।

কৃতজ্ঞতা—————————————————————————————————————

ডাঃ মুহাম্মদ শহীদুল আলম

এমবিবিএস (চমেক), এফসিপিএস (ইএনটি), এমসিপিএস (ইএনটি), ডিএলও (বিএসএমএমইউ), বিসিএস (স্বাস্থ্য)

নাক,কান,গলা বিশেষজ্ঞ ও হেড-নেক সার্জন

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

রুম নং-২১১

রোগী দেখার সময়ঃ

রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার

সন্ধ্যা ৬টা – রাত ৯টা

সিরিয়ালঃ ০১৭১২-৯২৮৮৭২,০১৮১০-০৩০৯৯৯,০১৮১০-০৩০৯৯৮

# চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাপাতাল লিঃ

টনসিল কি, কেন হয় এবং চিকিৎসা ও প্রতিকার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *