সচরাচর দেখা যায় যত্রতত্র গজিয়ে উঠা ফিজিওথেরাপি সেন্টারগুলো পেইন ম্যানেজমেন্ট এর ক্ষেত্রে সর্বদা গতানুগতিক ফিজিওথেরাপি দিয়ে ব্যথা কে প্রশমিত করতে যান, যার থাকেনা কোনো প্রি এসেসমেন্ট, অথবা সঠিক ডায়াগনোসিস। এতে করে রোগী দীর্ঘদিন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিয়েও উপকৃত হন না। মনে রাখবেন ব্যথা মানেই ফিজিওথেরাপি নয়।
ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা :
ঢাকায় যখন প্র্যাক্টিস করতাম বারিধারা ডিপ্লোম্যাটিক জোনে। তখন মাঝে মাঝে কতিপয় রোগী এসে বলতেন তারা ব্যথা এবং যত্রনার জন্যে দীর্ঘদিন ফিজিওথেরাপি নিয়ে উপকৃত হন নি। সেই ক্ষেত্রে ক্লিনিক্যাল এসেসমেন্ট, এবং ফিজিওলজিকাল এনালাইসিস করে কনফার্ম করতাম রোগী প্যাথলজিক্যাল ডিসিস এ ভুক্তভোগী।
কমন প্যাথলজিক্যাল ডিসিস এর ক্ষেত্রে পটস ডিসিস বা স্পাইনাল টিবি, মানইঞ্জিওমা, পেনকোস্টাল টিউমার, এনকেলসিং স্পন্ডিলাইটিস, কিডনি এবং পেনক্রিয়াটাইটিস ইত্যাদি রোগে কষ্ট পেত। এই সকল রোগের জন্য সংশ্লিষ্ট ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের কোনো বিকল্প নেই। অন্যথা মরণঘাতী হতেও পারতো। তাই এই সকল রোগী, রোগীর কল্যানেই সংশ্লিষ্ট ডাক্তার এর নিকট রেফার করা ইথিকাল কর্তব্য। এই সব রোগের ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি সেকেন্ডারী ভূমিকা পালন করে।
মাসকুলোস্কেলেটাল , নিউরোলজিক্যাল ডিসিস এবং ডিজেনারেটিভ ডিসিস এর ক্ষেত্রে সঠিক ফিজিওথেরাপিতে রোগী আশানুরূপ সাফল্য পান।
নিন্মোক্ত রোগে ফিজিওথেরাপি যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে–
#বাত-ব্যথা
#কোমড় ব্যথা
#ঘাড় ব্যথা
#হাঁটু অথবা গোড়ালীর ব্যথা
#আঘাত জনিত ব্যথা
#হাড় ক্ষয় জনিত রোগ
#জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া
#স্ট্রোক
#প্যারালাইসিস জনিত সমস্যায়
#মুখ বেঁকে যাওয়া বা ফেসিয়াল পালসি
#বিভিন্ন ধরনের অপারেশন পরবর্তী সমস্যায়
#আইসিইউ (ওঈট) তে অবস্থানকারী রোগীর জন্য
#পা বাঁকা (ক্লাবফিট)
#সেরিব্রাল পলসি (প্রতিবন্ধী শিশু)
#পুনর্বাসন সেবায় ফিজিওথেরাপির ভূমিকা অপরিসীম।
ফিজিওথেরাপি একটি বিজ্ঞান সম্মত চিকিৎসা যার দরকার সঠিক ডায়াগনোসিস এবং ক্লিনিক্যাল এসেসমেন্ট। তবেই রোগী উপকৃত হন। দয়া করে স্বল্পমূল্যে অথবা পথভ্রষ্ট হয়ে অদক্ষ ব্যক্তির দ্বারা ফিজিওথেরাপি দিয়ে নিজের ক্ষতি করবেন না।
তবে আশার ব্যাপার হল মানুষ এখন অনেক বেশি সচেতন। তাই ফিজিওথেরাপি সর্বদা একজন অভিজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের পরামর্শে গ্রহণ করবেন। ভালো থাকবেন।
লেখক-
ইফতেখারুল ইসলাম পাঠান
ইনচার্জ, ফিজিওথেরাপি বিভাগ
সি এস সি আর (CSCR Hospital)
যোগাযোগ : 01988594603