Chittagong Health Sector: As many masked gentlemen as brokers and discount butchers
আমাদের দেশের মানুষের আর্থিক সক্ষমতা এমনিতে কম।তার উপর বছর জুড়ে নানা অসুখ-বিসুখ লেগেই থাকে।সাধারণত মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পরিবারে বছরের আয়ের একটি বিরাট অংশ স্বাস্থ্যের পেছনে ব্যয় হয়।যতটা ব্যয় হয় চিকিৎসা সেবা পেতে তারচেয়ে বেশী ব্যয় হয় ভদ্র মুখোশধারী দালালের পেছনে।এরা সাহায্য করার বাহনায় আপনার চিকিৎসার খরচ বাড়িয়ে নিজেদের পকেট ভারী করবে।
আসুন দেখে নিই,কিভাবে?
আমরা পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে খোঁজ নিই এব্যাপারে জানে এমন কে আছে।সে ডাক্তার না হলেও তাকে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করি অথচ যে এমবিবিএস ডাক্তার আপনাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলো তাকে ভুলেও জিজ্ঞাসা করি না।আরেহ, সে কমিশন খাবে।ঠিক এই জায়গায় আমরা ভুল করে ফেলি।ভালো-মন্দ সব জায়গায় আছে কিন্তু উনাদের ডাক্তার সাজেশন ভুল হবে না।অন্তত বুকের ব্যথার জন্য বক্ষব্যাধির কাছে পাঠাবেন না আর বুকে শ্বাসকষ্টের ব্যথার জন্য হৃদরোগ স্পেশালিষ্টেরর কাছে পাঠাবেন না।আজ আমরা নিজেদের ভুলে চিকিৎসা খরচ বাড়িয়ে ফেলছি।
আমরা কাদের থেকে পরামর্শ নিই:
# স্যোশাল মিডিয়া গ্রুপ
# ফার্মেসির সেলসম্যান
# হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়,আয়া
# অ্যাম্বুল্যান্সের ড্রাইভার
# রিসিপশনিস্ট
# হাসপাতালের পাশের দোকানদার
# হাতুড়ে ডাক্তার
# ডাক্তারের কম্পাউন্ডার
# মেডিসিন কোম্পানির এমআর
(কেবল একজন ডাক্তারই, অন্য একজন ডাক্তার সম্পর্কে বলতে পারবেন।অন্তত নার্স,টেকনোলজিস্ট যারা আছেন, উনারা।কিন্তু কোনভাবেই নন-মেডিকেল কারো পক্ষে বলা সম্ভব না)
বিশেষ করে আজকাল ফেসবুকে কিছু গ্রুপ সৃষ্টি হয়েছে, যারা সব ডাক্তারি বিষয়ে জ্ঞান রাখেন।মানুষ সরল বিশ্বাসে জিজ্ঞাসা করে আর উনারা শুধুমাত্র তাদের পছন্দের ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এগুলোর রেফার করে।উল্টো বলে,বিশেষ ডিসকাউন্ট আছে।কেউ বলে ১০%,আবার কেউ বলে ২০%
আরে ভাই,আপনি তো মানুষ।মাথাটা একটু খাটান।
যে কোন ডায়াগনস্টিক সেন্টার আপনাকে ২০% ডিসকাউন্ট দিবে।যদি বিনা রেফারেন্সে নিজের হেলথ চেকআপের জন্য যান অবশ্যই ৩০% ডিসকাউন্ট দিবে।না হলে করাবেন না।
(চট্টগ্রাম শহরে সারা বছর ২০% থেকে ২৫% ডিসকাউন্ট দেয়,এমন ল্যাব আছে।গিয়ে কারো নাম বলতে হবে না)
যে কোন হাসপাতালের বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্তরা মানুষ এবং উনাদের যৌক্তিক কারণ দেখালে কম-বেশী ডিসকাউন্ট দেন।
কিন্তু এখানে ভদ্র দালালরা বলে, আপনাকে ডিসকাউন্ট করিয়ে দিবো কিন্তু কিভাবে????
২০% দাম বাড়িয়ে আবার ২০% ডিসকাউন্ট দেয়।বাকী ২০% নিজের জন্য রেখে দিতে বলে।অথবা আপনাকে যে ডিসকাউন্ট দিবে তার বদলে হয়তো আপনি টেস্ট ছাড়াই রিপোর্ট পাবেন।কোন শারিরিক সমস্যা নেই।যার কোড নেম”বালতি টেস্ট” ।
অথবা টেস্টের রিয়েজেন্টের মান খারাপ হবে।আল্টিমেটলি ডায়াগনস্টিক সেন্টার তার লস করে আপনাকে ডিসকাউন্ট দিবে না,উপরন্তু ভদ্র দালালদের লালসা মেটাতে হবে।যদি কমিশন না দেয় তাহলে সংঘবদ্ধ ভাবে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বদনাম ছড়াবে।বেচারা ডায়াগনস্টিক ওয়ালা কোথায় যাবে!!!
গ্রামের দিকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে স্পেশাল কোড দেখেছি”অমিট কেস”।হাতুড়ে ডাক্তার রোগীকে ১০হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকার টেস্ট দিবে।এরপর বড় করে লিখে দিবে ৫০% ডিসকাউন্ট।রোগী চেম্বার থেকে যাওয়ার পর ল্যাবে কল করে বলে অমুক অমুক টেস্ট করতে হবে না,নরমাল রিপোর্ট দাও।চট্টগ্রামেরর জামালখানের ছোট ছোট ল্যাব গুলোতে এখনো হয়।
ডাক্তার,নার্স,টেকনোলজিস্ট উনারা মানুষ।এদের জিজ্ঞাসা করুন,পরামর্শ নিন।হয়তো কাজের চাপে সবসময় মন ভালো থাকে না কিন্তু মুখটা গোমড়া করে হলেও এরা ভালো পরামর্শ টা দিবে।জেনে ও বুঝে দিবে।যারা বছরের পর বছর এই সাবজেক্টে পড়ালেখা করেছেন উনাদের থেকে পরামর্শ নিন।
দুনিয়ার সব রোগী কি শুধুমাত্র এক ডাক্তারের চিকিৎসায় ভালো হচ্ছে।চট্টগ্রামে এক ডাক্তারের সিরিয়াল নিতেই ৮০০/ দালালদের দিতে হয়।এটা কি ডাক্তারের দোষ?????
না,ভাই।এটা আপনার দোষ।আমার দোষ।সম ডিগ্রী নিয়ে আরো ডাক্তার আছে তাদের কাছে চিকিৎসা নিই।তাদের কি রোগী নেই???
কেন আমরা হাসপাতাল স্টাফ গুলোকে লোভে ফেলছি ?????
কেন কিছু দালালকে অঢেল টাকাপয়সার মালিক বানাচ্ছি ???????
নিয়ম মানলেই সমাধান:
# যা কিছু জানার,নিজে গিয়ে জেনে নিয়ে আসুন।
# শারীরিক সমস্যা একবার হলে আর হবে না,এমন না।সুতরাং নিজের সমস্যা নিজে সমাধান করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকুন।
# আপনার যে কোন শারীরিক সমস্যার জন্য অন্তত একবার জন্য হলেও একজন “এমবিবিএস” ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।উনি আপনাকে সঠিক তথ্য দিতে পারবে।
# ডাক্তার দের ভিজিটিং কার্ডে যাবতীয় ডিগ্রী লেখা থাকে।আপনাকে মূলত চিকিৎসা দিবে ঐ ডিগ্রীগুলো।ব্যক্তি না।তাই নিজেই অনুসন্ধান করুন।
# ডাক্তারকে মন খুলে কথা বলুন,যত প্রশ্ন আছে করে ফেলুন।তিনি আপনাকে জবাব দিবেন।উনার কাছে না জানলে আপনার মনে হাজার কনফিউশন কাজ করবে।
# কোন ডাক্তার আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে না চাইলে ভদ্র ভাবে এড়িয়ে যান।আর কখনো উনার কাছে যাবেন না।
# ডিসকাউন্টের ব্যাপারে রিসিপশন বা কাউন্টার কোন হেল্প করতে না পারলে সরাসরি ম্যানেজারের কাছে যান।অনেক ল্যাবে “পাবলিক রিলেশন অফিসার” আছে, উনিও হেল্প করবেন।
# হাসপাতালের ক্ষেত্রে সেম প্রসিডিউর ফলো করুন।
# হাসপাতলে ভর্তির আগে অনলাইনে বা কল করে তাদের ফ্যাসিলিটি ও খরচ কেমন জেনে নিন।
# সব ল্যাবে সরকার ল্যাবটেস্টের দামের চার্ট রোগীদের জন্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করেছে।তাই রিসিট হাতে পাওয়ার পর চার্টের সাথে মিলিয়ে নিন।
# আগে থেকেই যে বলবে ঐ জায়গায় করলে এত পারসেন্ট ডিাকাউন্ট তাকে সযত্নে এড়িয়ে চলুন।কোয়ালিটি ফ্যাক্ট,ডিসকাউন্ট না।
# নন-মেডিকেল কারো কাছে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোন পরামর্শ নিবেন না।১০ জনের ১০ মতে আপনি কনফিউজড হয়ে যাবেন।
# স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়ে মেডিকেল বা চিকিৎসা জাতীয় হেল্প চাইবেন না,কারণ ঐখানে কোন ডাক্তার থাকে না।বাস্তবের ডাক্তার রোগীর চিকিৎসা দিয়েই সময় পায় না।যা থাকে প্রায়ই সময় “নন-মেডিকেল এটেনশন সিকার”।আপনার প্রশ্নের উত্তরে বলবে,ইনবক্সে আসেন।
# প্রায়ই হাসপাতালে আর্থিকভাবে অসামর্থ্যদের জন্য আলাদা ফান্ড থাকে।আবেদন করার প্রক্রিয়া জেনে নিন।কারো কাছে যেতে হবে না।কতৃপক্ষ রোগীর সন্তুষ্টির জন্য নিজেই ডিসকাউন্টের ব্যবস্থা করবে।
# সরকারী হাসপাতালে থাকার সময় ঔষধ কেনার সময় কারো কথায় নির্দিষ্ট দোকানে যাবেন না। দরদাম করে ঔষধ কিনুন।
ভাই দেশটা আপনার।মানুষ গুলোও আপনার। প্রশ্নটা করে ফেলুন।কেউ আপনাকে হতাশ করবে না।বিশেষ করে বেসরকারী ল্যাব-হাসপাতাল গুলোতে।কেন দালাল ধরবেন।কেন নিজের চিকিৎসার খরচ বাড়াবেন ??????
কমিশন খাওয়া-দেওয়া দেশের ও ধর্মীয় আইনে অপরাধ
লেখক-
একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট
(হয়রানির ভয়ে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানে নাম দেয়া হল না কিন্তু এরা চট্টগ্রামেই আছে)
60% less?
এটা বাটপারি অফার