প্রি-এক্লাম্পসিয়া কি ?
প্রি-এক্লাম্পসিয়া উচ্চ রক্তচাপ জনিত একটি সমস্যা যা শুধুমাত্র গর্ভবতী মায়েদের হয়ে থাকে। শতকরা ৫-১৫ ভাগ নারী গর্ভাবস্থায় এই সমস্যায় ভুগতে পারেন। গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহের পর যদি কারো উচ্চ রক্তচাপ ধরা পরে এবং ইউরিনের সাথে প্রোটিন বা এলবুমিন যায় তবে এই উপসর্গকে প্রি-এক্লাম্পসিয়া বলা হয়। শরীরে অতিরিক্ত পানি আসা অনেক মায়ের ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষন যার কারনে তারা চিকিৎসকের সরনাপন্ন হয়ে থাকেন।
চট্টগ্রামের সেরা ১০ স্ত্রী ও প্রসূতীরোগ বিশেষজ্ঞ
কাদের বেশি হবার সম্ভাবনাঃ
প্রথমবার গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রেই সাধারণত প্রি-এক্লাম্পসিয়া বেশি হয়ে থাকে। পূর্বের প্রেগনেনসিতে যাদের প্রি-এক্লাম্পসিয়া হয়েছিল তাদের ২৫ ভাগ ক্ষেত্রে পুনরায় প্রি-এক্লাম্পসিয়া হতে পারে। যেসব মায়েরা উচ্চরক্তচাপ, কিডনী সমস্যা কিংবা ডায়াবেটিস এ ভুগছেন তাদের ক্ষেত্রে প্রি এক্লাম্পসিয়া হবার সম্ভাবনা অনেক বাশি থাকে। এছাড়াও একের অধিক গর্ভধারন,পলিহাইড্রামনিওন্স প্রি-এক্লাম্পসিয়ার কারন হতে পারে।
প্রি-এক্লাম্পসিয়া দুই ধরনের হয়–
মাইল্ড বা মৃদু প্রি-এক্লাম্পসিয়াঃ এক্ষেত্রে রক্তচাপ ১৪০/৯০ মিঃ মারকারির এর বেশি থাকে কিন্তু ১৬০/১১০মিঃ মারকারির এর কম থাকে।
সিভিয়ার বা মারাত্বক প্রি-এক্লাম্পসিয়াঃ এক্ষেত্রে রক্তচাপ ১৬০/১১০ মিঃ মারকারি এর বেশি থাকে। এই সাথে অন্যান্য কিছু উপসর্গ থাকে যেমন মাথা ব্যাথা, চোখ জ্বালা পোড়া,চোখে ঝাপসা দেখা, পেটে ব্যাথা,প্রসাবের পরিমান কমে যাওয়া,সারা শরীরে পানি আসা ইত্যাদি।
চিকিৎসা যখন অপচিকিৎসা: জরায়ুতে প্লাসেন্টা থেকে যাওয়া
মা ও বাচ্চার কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে ?
গর্ভাবস্থায় মায়ের প্রি-এক্লাম্পসিয়া থাকলে এটি একটি ঝুকিপূর্ন প্রেগনেন্সি। প্রি-এক্লাম্পসিয়া মারাত্বক পর্যায়ে গেলে এক্লাম্পসিয়া বা খিচুনি হয়, যা মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর একটি বড় কারন। কম ওজনের শিশু জন্মদান, সময়ের আগে ডেলিভারি হওয়া, মাতৃগর্ভে শিশু মৃত্যু,এন্টি পারটাম হেমোরেজ ইত্যাদি সমস্যাগুলো প্রি-এক্লাম্পসিয়া আক্রান্ত মায়েদের ক্ষেত্রে সচরাচর ঘটে থাকে।
সঠিক সময়ে এ রোগের চিকিৎসা না হলে এর জটিলতা থেকে কিডনী ফেইলর, লিভার ফেইলর কিংবা ব্রেন হিমোরেজও হতে পারে। কিছু কিছু রোগীর শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তক্ষরন, লিভার ফেইলর সহ অন্যান্য জটিলতা হয় যাকে এক কথায় HEELP syndrom বলে।
চিকিৎসাঃ
মাইল্ড বা মৃদু প্রি-এক্লাম্পসিয়া বাসায় রেখেই চিকিৎসা সম্ভব। পর্যাপ্ত বিশ্রাম, উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ এর প্রাথমিক চিকিৎসা। কিন্তু সিভিয়ার প্রি-এক্লাম্পসিয়ার ক্ষেত্রে রোগীকে বাসায় রাখার সুযোগ নাই। এক্ষেত্রে রোগীকে হসপিটালে ভর্তি রেখে মা ও গর্ভস্থ শিশুর সঠিক পর্যবেক্ষন ও চিকিৎসা এবং এক্লাম্পসিয়া বা খিচুনি প্রতিরোধের জন্য ব্যাবস্থা নেয়া হয়।
বয়স ৩০ এর পরের বিয়েতে নারীদের বাচ্চা নিতে কি সমস্যা হতে পারে ?
প্রতিরোধের উপায়ঃ
যেহেতু প্রি-এক্লাম্পসিয়া হবার সঠিক কারন জানা যায়নি,তাই এর প্রতিরোধেরও নির্দিষ্ট কোন ব্যাবস্থা নেই। যারা প্রি-এক্লাম্পসিয়া হবার ঝুকিতে আছেন তাদের ক্ষেত্রে অ্যাসপিরিন,ক্যালসিয়াম, এন্টি অক্সিডেন্ট জাতীয় ঔষধ প্রতিরোধক হিসেবে দেয়া যায়। এছাড়া সঠিক খাদ্যাভ্যাস,ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখা, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন এবং নিয়মিত ডাক্তারের চেক আপের মাধ্যমে প্রি-এক্লাম্পসিয়া প্রতিরোধ এবং এর জটিলতা এড়ানো সম্ভব।
ডাঃ নুসরাত জাহান
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর (অবস গাইনী )
খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ,
সিরাজগঞ্জ।
reference: www.facebook.com
চট্টগ্রামের সেরা ১০ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রামের সেরা ১০ নিউরো-মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রামের সেরা ১০ মেডিসিন বিশেষজ্ঞ
চট্টগ্রামের সেরা ১০ মানসিকরোগ বিশেষজ্ঞ