COVID-19 তথা করনা ভাইরাস পুরো পৃথিবীকে আমূল বদলে দিয়েছে।বদলে দিয়েছে পরিবেশ,বদলে দিয়েছে মানুষের মনোজগৎ। মানুষ স্মরণ কালের ভয়াবহতম চাপের মুখে রয়েছে।মানুষ ভেবে এখনো কূল-কিনারা করতে পারছে না, সাহায্য আসবে কিনা।রাত শেষে ভোর হবে কিনা!
করোনায় মানুষ এখন ঘরবন্দী। মুক্ত আকাশের পাখি হতে চাওয়া মানুষ এখন বন্দী।স্বাভাবিক ভাবেই সে মানিয়ে নিতে পারছে না।ধীরে ধীরে সে খিটমিটে মেজাজের হয়ে যাচ্ছে।না চাইতেও মেজাজ ধরে রাখতে পারছে না।এই পরিস্থিতিতে পরিবার ও প্রিয়জনদের পাশে দাঁড়ানো অনেক বেশী প্রয়োজন।অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে পরিবার-পরিজনকে বেশী সময় দিন।
# সৃজনশীল কাজে উৎসাহ দিন
ঘর বন্দী মানুষের সময় কাটে না।স্বাভাবিক সময়ে সে যে কাজ করতো,এখন তার সে কাজ ভালো নাও লাগতে পারে।সে যা করতে চায়ছে তাতে সমর্থন করুন, উৎসাহ দিন।তাকে ব্যস্ত থাকতে দিন না হলে হাপিয়ে উঠবে।বিরক্ত হয়ে যাবে।
# সবার মনের ভাষা পড়ুন,বুঝুতে চেষ্টা করুন
১৯৭১ সালের যুদ্ধের পরে মানুষ এত বড় সমস্যায় আর পড়েনি।মানুষ অনেকটাই দিশেহারা।বিশেষ করে শিশুরা।তারা একটি অদ্ভুত বিশ্ব প্রত্যক্ষ করছে।স্বভাবতই তারা নিজেদের উপর কন্ট্রোল হারাবে।তারা বিচিত্র প্রশ্ন করবে।ধৈর্য্য ধরে উত্তর দিন।যেভাবে সময় কাটাতে চায়,সহযোগীতা করুন।বন্ধুদের সাথে ফোনে কথা বলতে সাহায্য করুন।
# অল্প সময় হোক,তবে নিয়মিত কুশলাদি জিজ্ঞাসা করুন
ঘরে থাকতে থাকতে আপনিও বিরক্ত হবেন, এটা স্বাভাবিক।তবে তা বুঝতে দিবেন না।নিয়মিত সবার খোঁজ -খবর নিন।সামাজিক মাধ্যমে অন্তত মেসেজ দিয়ে রাখুন,এটা তাদের মানসিক শক্তি অক্ষুন্ন রাখবে।
# পরিবর্তনকে মানিয়ে নিন
স্বাভাবিক সময়ে প্রিয়জন কারো আচরণ ছিল একরকম, করোনার পরে আপনার মনে হচ্ছে।পরিবর্তন হয়ে গেছে।মানিয়ে নিন, এটাই স্বাভাবিক।মানব শরীরের নিজস্ব সিস্টেম আছে যার মাধ্যমে সে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়। ঝড় থেমে গেলে সে আবার স্বাভাবিক হয়ে যাবে হয়তো আগের চেয়ে আরো মধুর হয়ে উঠবে তার সঙ্গ।
# কিছু লাগবে কিনা ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসা করুন
এই দুঃসময়ে প্রত্যেকের কিছু না কিছু অভাব রয়েছে।আপনার পক্ষে সবাইকে সাহায্য করা সম্ভব নাও হতে পারে।আবার প্রত্যেকের সাহায্য লাগবে এমনটাও না হতে পারে।তবে আপনার আপনার আন্তরিক এপ্রোচ সবার মনে সাহস যোগাবে। অন্তত কেউ একজন আছে তার কথা ভাবে।
# মনযোগ দিয়ে শুনুন,সাথে সাথেই রিয়াক্ট করবেন না
করোনা ভাইরাসের কারণে যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার জন্য সর্বোত্তম সাহায্য কি হবে,অনেকসময় সাথে সাথে বুঝা সম্ভব নয়।তাকে সময় দেওয়া উচিত, নিজেকে সামলানোর জন্য।নিজেকে বুঝার জন্য।তাকে মন ভালো করতে সাহায্য করুন।তার অনুভূতি গুলোর মূল্যায়ন করুন।
# ধর্মীয় প্রার্থনায় আগ্রহী করে তুলুন
ইবাদত-আরাধনা মানুষকে শক্তি যোগায়।মানুষ জন্মগতভাবেই ভঙ্গুর।সে আশ্রয় খোঁজে। সে আপনজন খোঁজে।স্রষ্টার চাইতক বড় আপনজন কেউ নেই।উনার মহিমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিন।
# মানসিক সেবাদানকারী ব্যক্তির সাহায্য নিতে উৎসাহিত করুন
যখন আপনার পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।তখন একজন সাইকোলজিস্ট বা সাইক্রিয়াটিস্টের সাহায্য নিতে উৎসাহ দিন।উনারা অভিজ্ঞ ও বন্ধবৎসল যা আপনার প্রিয়জনকে দুঃসময় পার করতে সাহায্য করবে।আপনি নিজেও উনার কাছ থেকে কিছু টেকনিক শিখে নিতে পারেন।
# প্ল্যান করতে সহযোগিতা করুন
করোনা পরবর্তী সময়ে সে কি কি কাজ করতে পারে, তার তালিকা করতে সাহায্য করুন।কোথায় কোথাশ বেড়াতে যাবেন সে সম্পর্কে তাকে বলুন।উদ্বুদ্ধ করুন, সোনালী ভবিষ্যতের।
# রান্না করুন প্রিয়জনের জন্য
মানুষ স্বভাবতই ভোজনরসিক, কেউ বেশী আর কম।বলুন,সবার ছুটি। আজকে আপনি সবার জন্য রান্না করবেন।সবাই উৎসাহিত বোধ করবে।রান্না যেমনই হোক সবাই এক্সািটেড বোধ করবে।চাইলে কি খাবে জিজ্ঞাসা করতে পারেন।